ফ্ল্যাটে এখন কোন ধরনের বেসিন ও কল চলছে?

আধুনিক ঘরবাড়িতে ব্যবহৃত ছোট-বড় জিনিসগুলোর ছোটখাটো পরিবর্তনেই বাড়ির চেহারা অনেকটা বদলে যায়। আধুনিক ফিচার ও স্টাইলের ওয়াশ বেসিন ও কল ফিটিংস সেই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে, বিশেষভাবে আলোচ্য, কারণ, বাড়ির এই জিনিসগুলোই ব্যবহৃত হয় সবচেয়ে বেশি।

আপনার ব্যক্তিত্ব ক্ল্যাসিক না আধুনিক, মিনিমালিস্টিক নাকি বোল্ড, এসব ছোটখাটো ফিটিংস বা উপাদান দিয়ে তা ও বোঝা যায়। এমনকি স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতার জন্যও এই উপকরণ ব্যবহারের আগে যাচাই, করে নেওয়া জরুরি।
ফ্ল্যাটে এখন কোন ধরনের বেসিন ও কল চলছে

বেসিনের বাজার?

বাড়িতে সাধারণত খাবার ঘরের আশপাশে ও ওয়াশরুমে বসানো হয় বেসিন তবে প্রয়োজন বা সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য। অনেকে বাড়ির বাইরের আঙিনায়ও বেসিন ব্যবহার করেন বেসিন বা কল ফিটিংস পছন্দ করার আগে। প্রথমেই বাড়ি বা বাথরুমের থিমকে মাথায় রাখতে হবে,এখানে তাই কিছু বেসিনের, বৈশিষ্ট্য জেনে নিন।

পেডেস্টাল ওয়াশ বেসিন: ঐতিহ্যবাহী নকশার বেসিনের মধ্যে এগুলো অন্যতম। এই বেসিনের সঙ্গে একটা লম্বা বা উঁচু স্তম্ভ থাকে। যেটা বেসিনের ড্রেনেজ পাইপটাকে লুকিয়ে রাখে, একই সঙ্গে মূল বেসিনকে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে। পেডেস্টাল বেসিনের গ্রহণযোগ্যতা সবখানেই থাকে; মডার্ন কিংবা ট্র্যাডিশনাল সব থিমেই এটি মানানসই।

ওয়াল হ্যাং বেসিন: বাসাবাড়িতে জায়গা নিয়ে যদি টানাটানি থাকে, তাহলে ওয়াল হ্যাং বেসিন সবচেয়ে ভালো অপশন। সাধারণত ডাইনিং রুমে বা ছোট বাথরুমে জায়গার স্বল্পতায় বড় পেডেস্টাল বেসিন সেট করা যায় না। এমন ক্ষেত্রে নানা ডিজাইনের ছোট সিংকের ওয়াল হ্যাং বেসিন খুবই উপযোগী। কিচেন, গার্ডেন বা বারান্দায়ও এমন বেসিন ব্যবহার করেন কেউ কেউ।

ওয়াল মাউন্টেড বেসিন: আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টে জায়গা একটা নির্দিষ্ট বর্গফুটে আটকে থাকে, অ্যাপার্টমেন্টে সীমিত জায়গা। মেঝের জায়গা বাঁচাতে, কখনোবা নকশা ঠিক রাখতে ওয়াল মাউন্টেড বেসিন ভালো বিকল্প, এই বেসিনগুলো যেকোনো উচ্চতায় সেট করা যায়।

তাই পরিবারের ছোট সদস্যদের জন্য এটি খুবই উপযোগী আলাদা বেদি বা স্তম্ভ না থাকায় পরিষ্কার করাও সহজ। এই বেসিনের পানি সরাসরি দেয়ালের ভেতর দিয়ে করা লাইনে পাস হয়ে যায়, ফলে বেসিনে, নিচের মেঝেতে খোঁড়াখুঁড়ি বা আলাদা কোনো পাইপ রাখার দরকার পড়ে না।

কাউন্টারটপ ওয়াশ বেসিন: আজকাল আধুনিক ও বড় ওয়াশরুমগুলোতে কাউন্টারটপ ওয়াশ বেসিন বেশি ট্রেন্ডি। এ ধরনের বেসিনগুলোর আলাদা আভিজাত্য আছে, প্রথম দেখাতে এই বেসিনগুলোকে মনে হয়। নিজেই একটা সাজানো আসবাব। বেশ বড় আর মজবুত হওয়ায় এই বেসিন টেকসইও হয় বেশ। বেসিনের নিচে কাউন্টার বা আলাদা কাঠামো থাকায় পানি ছিটকে ফ্লোরে পড়ার আশঙ্কা কম।

এই বেসিনের নিচের অংশে আলমারির মতো তাক করে তোয়ালে বা হ্যান্ডওয়াশের মতো দরকারি, জিনিস রাখা যায়।

বেসিনের উপকরণ?

কাচ: কাচের তৈরি বেসিনের সঙ্গে একটা কাউন্টারটপ থাকলে খুবই আকর্ষণীয় দেখাবে কালারলেস, স্মোকড। স্বচ্ছ, অস্বচ্ছ বিভিন্ন ধরনের কাচের বেসিন আছে কাচের বেসিন শুধু কাউন্টার ড্রিল করে সহজেই বসানো যায়। দেয়ালে কোনো অতিরিক্ত খোঁড়াখুঁড়ির প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়া পরিষ্কার করাও, সহজ।

পোরসেলিন: স্থায়ী, মজবুত ও ক্ল্যাসিক ধাঁচের বেসিন যদি চান; তবে আপনার জন্যই পোরসেলিন বেসিন। এ ধরনের উপকরণ থাকলে বেসিন একটু সাবধানে ব্যবহার করতে হয়,কেননা এতে পানির দাগ থেকে যায়, ধারালো কিছুতে সহজেই স্ক্র্যাচ পড়ে।

অ্যাক্রেলিক: এই বেসিনগুলো একটু চকচকে, তবে হালকা শুধু অ্যাক্রেলিক উপাদানে তৈরি বেসিনগুলোতে একটুতেই স্ক্র্যাচ পড়ে যায়। তবে পলিমারের মিশেলে তৈরি হলে দাগ অত সহজে পড়ে না অতিরিক্ত তাপেও। অ্যাক্রেলিক উপাদানে তৈরি বেসিনগুলোর ক্ষতি হয়, তাই ওয়াশরুম সাজাতে বা লাক্সারি বাথ নিতে এমন বেসিনের ওপর। মোমবাতি না জ্বালানোই ভালো। নেইলপলিশ রিমুভারও এমন বেসিনের জন্য ক্ষতিকর।

সিরামিক: সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও হালকা রঙের বেসিন যাঁদের চাই, তাঁদের জন্য সিরামিক সবচেয়ে ভালো অপশন। সিরামিকের বাড়তি যত্নেরও প্রয়োজন পড়ে না এটা পরিবেশবান্ধব হিসেবেও স্বীকৃত তবে এই, বেসিন কিছুটা ভঙ্গুর হওয়ায় সাবধানে সেট করতে হবে।

স্টোন বা পাথর: যাঁরা গতানুগতিক নকশার বাইরে একটু অন্য ধাঁচের বেসিন পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য গ্রানাইট, স্লেট বা মার্বেল পাথরের বেসিন। এই বেসিনে থাকে নজরকাড়া সব ডিজাইন আর প্রাকৃতিক আবহ এ ধরনের উপকরণে তৈরি বেসিন আবার বিলাসবহুল হিসেবেও সমাদৃত।

কপার: আজকাল অনেকেই কপারে তৈরি বেসিন পছন্দ করেন সাধারণত গাঢ় ধূসর ও কালোরঙা হয়। এই বেসিনগুলো। কপারের বেসিন বসানোও বিশেষ ঝামেলার নয়।

কলের কথা?

ওয়াশরুমের ইন্টেরিয়র ডিজাইনের আরেকটি অন্যতম উপাদান হলো কল ফিটিংস কল বা ট্যাপগুলোও আজকাল বিভিন্ন ফিচার। আর আধুনিকতার স্পর্শ পেয়েছে কলের মতো ছোট একটা উপাদানও আপনার ওয়াশরুমের থিমকে করে তুলতে পারে। বিশেষ দেশে প্লাস্টিক ও ধাতব কল দেখা যায় বেশি, এর মধ্যে প্লাস্টিকের কল । তুলনামূলক কম দামি ও কম টেকসই তবে স্টাইলিশ অন্দরে ধাতব কলই, বেশি প্রচলিত।

আধুনিক কলের বৈশিষ্ট্য ও ধরন?

আধুনিক কলের বৈশিষ্ট্য ও ধরন

আধুনিক কলগুলোর মধ্যে ধাতব উপকরণই বেশি দেখা যায়। তবে সেটা চিকন বা মিনিমালিস্টিক ডিজাইনের হয়ে থাকে। এসবের অনেকটাই কাস্টমাইজ করা যায়, যাতে আপনার থিম বা পছন্দের, ডেকোর ওয়াশরুমের সঙ্গে সেটার মিল থাকে।

অত্যাধুনিক গুণমানসম্পন্ন উপকরণে তৈরি কলে আজকাল পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায় খুবই গ্রাহকবান্ধব উপায়ে। লিকেজ বা ড্রিপের সমস্যাও হয় না। পিভিডি কোটিং থাকায় এসব কল স্থায়ী হয় অনেক দিন, সেই সঙ্গে। পরিবেশবান্ধব হিসেবেও স্বীকৃত পলিশড, গ্লসি বা ম্যাট ফিনিশড, সিলভার, কপারের কল পাওয়া যায় এখন।

অনেক কলে আজকাল ফিল্টার সুবিধা থাকায় সাধারণ কলের তুলনায় পানি নিরাপদ পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বলে পানির অপচয় হয় না, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণপদ্ধতি চালু থাকায় অতিরিক্ত কার্বন, ডাই–অক্সাইড নিঃসরিত হয় না, বিদ্যুৎ বিলও আসে কম।

আধুনিক কলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে হ্যান্ডেলের ব্যবস্থা করা হয় নোব মডেলের চেয়ে, লেভেল বা হ্যান্ডেল সিস্টেম স্বাস্থ্যকর এবং বাড়ির ছোটদের জন্য খুব সুবিধাজনক। বেসিন, বাথটাব, শাওয়ার কলের জন্য বিভিন্ন স্টাইলের কল যেমন বাথ ও শাওয়ার মিক্সার ট্যাপ। কাউন্টারটপ ট্যাপ, মনোব্লক, পিলার, ওয়াল মাউন্টেইন বা ফ্রিস্টাইল ট্যাপ আজকাল জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছে।

টাইলস ভেঙে বা ফেটে গেলে কী করবেন?

টাইলস ভেঙে বা ফেটে গেলে কী করবেন

বাড়ি তৈরির সময় টাইলস সঠিকভাবে বসানো না হলে, শুরুতেই সঠিক পরিমাণে ও পদ্ধতিতে আঠা বা গ্রাউট ব্যবহার করা না হলে, সামান্য চাপেই ভেঙে যেতে পারে টাইলস, ধরতে পারে ফাটল। ঘরে বড় ও ভারী আসবাব রাখার সময় টাইলস ভেঙে যেতে পারে। আবার টাইলসের নিচে যদি সঠিকভাবে সাপোর্ট, না থাকে, তাহলেও টাইলস ভেঙে যেতে পারে।

অনেক সময় বাড়ির পিলার দেবে যায় ফলে মেঝের নিচের স্তরও নড়ে যায়। টাইলসের ওপর চাপ পড়ে, এবং ভেঙে যায় বা ফাটল ধরে। কখনো কখনো অতি গরম বা ঠান্ডায় টাইলস সম্প্রসারিত বা সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে টাইলস ভেঙে যায় বা ফাটল ধরে। এ ঘটনা বেশি ঘটে রান্নাঘর বা বাথরুমের মতো, জায়গায়। আর টাইলস যদি হয় নিম্নমানের, তাহলে যেকোনো ঠুনকো কারণেই সেটা ভেঙে যেতে পারে, বা ফাটল ধরতে পারে।

প্রাথমিকভাবে যে পদক্ষেপ নিতে হবে?

প্রথমেই বুঝতে হবে, টাইলস কতটা ভেঙেছে বা ফাটল ধরেছে। ফাটল যদি ছোট হয়, তাহলে সাধারণ, মেরামতেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বড় ফাটল হলে নতুন করে টাইলস বসাতে হবে ফাটলটা কি শুধু উপরিভাগে। নাকি পুরোটাই ভেঙেছে? যদি ফাটল উপরিভাগে হয়, তাহলে শুধু পলিশ করে মেরামত, করা যেতে পারে, কিন্তু ফাটল বড় হলে টাইলস প্রতিস্থাপনই একমাত্র সমাধান।

কিছুটা ভাঙা বা ফাটল ধরা টাইলস যদি মেঝেতে থাকে, সেখানে হাঁটার সময় সতর্ক থাকতে হবে কারণ, অল্প ভাঙা থেকে পুরো টাইলস ভেঙে যেতে পারে।

অস্থায়ী সমাধান?

টাইলসের ভাঙা অংশ পরিষ্কার করে রাখতে হবে। কারণ, টাইলসের ফাটলের মধ্যে ধুলাময়লা জমলে, পরে মেরামত করা কঠিন হয়ে যাবে। এমন জায়গা পরিষ্কার করার জন্য নরম ব্রাশ ব্যবহার করত পারলে ভালো হয়।

পানিরোধক সিলার দিয়ে ভাঙা অংশ ঢেকে রাখতে হবে সিলার টাইলসের ফাটলের মধ্য দিয়ে পানি ঢুকতে দেবে না। ফলে মেঝের ক্ষতিও হবে না। বাথরুম বা রান্নাঘরের টাইলসের ক্ষেত্রে এটা করাটা বেশি জরুরি।

অস্থায়ীভাবে ফাটল ঢাকা দেওয়ার জন্য অস্থায়ী পেস্ট বা ফিলার ব্যবহার করা যেতে পারে বাজারে বিভিন্ন ধরনের টাইলস। রিপেয়ার কিট পাওয়া যায়, যা ফাটল ঢেকে রাখবে এটি স্থায়ী সমাধান নয় তবে, সাময়িকভাবে কাজ করবে।

ভাঙা বা ফেটে যাওয়া টাইলসের মেরামত?

ভাঙা বা ফেটে যাওয়া টাইলসের মেরামত

টাইলস ভেঙে গেলে দ্রুত সরিয়ে ফেলা উচিত এ কাজে চিজেল বা ছেনি ও হাতুড়ি ব্যবহার করা যেতে, পারে। সাবধানে ভাঙা টাইলস সরিয়ে ফেলুন, যাতে আশপাশের টাইলস ক্ষতিগ্রস্ত না হয় ভাঙা টাইলসের নমুনা দোকানে নিয়ে যেতে হবে। একই রকম টাইলস পাওয়া গেলে ভালো প্রয়োজনীয় টাইলস কিনে বসিয়ে দিন। তবে যদি অনেক বছর আগের টাইলস হয়, তাহলে পাওয়াটা কঠিন হতে পারে,এসব ক্ষেত্র, অনেক সময় পুরো ঘরের টাইলস বদলানোর দরকার হয়ে পড়ে।

টাইলস কেনার আগে তাই সেটা পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে কি না, জেনে নিন এসব ক্ষেত্রে দেশি ব্র্যান্ডের টাইলসই ভালো। প্রয়োজনে কোম্পানির সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়, তবে বিদেশি টাইলস হলে অসুবিধায় পড়তে হবে।

নতুন টাইলস বসানোর সময় সঠিক আঠা ব্যবহার করা উচিত সঠিক পরিমাণে আঠা প্রয়োগ করলে, টাইলস স্থায়ীভাবে বসে যাবে। নতুন টাইলস বসানোর পর গ্রাউট দিয়ে ফাঁকা জায়গা পূরণ করে নিতে হবে। গ্রাউট টাইলসের মধ্যে ফাঁকা স্থানগুলো পূর্ণ করে, সেগুলোকে মজবুতভাবে ধরে রাখে গ্রাউট, শুকিয়ে গেলে টাইলস স্থায়ীভাবে বসে যাবে।

কখন বিশেষজ্ঞের সাহায্য লাগবে?

টাইলস বেশি ভাঙলে বা ফাটল বেশি হলে টাইলসের নিচের স্তর, অর্থাৎ মেঝেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কখনো কখনো পুরো মেঝেতে ফাটল দেখা দেয়, এসব ক্ষেত্রে পেশাদারের সাহায্য নেওয়া উচিত।
  • টাইলসের ভাঙন ও ফাটল প্রতিরোধের উপায়?
নিম্নমানের টাইলস দ্রুত ফেটে যায় এবং সঠিকভাবে মেঝেতে বসে না তাই টাইলসের ভাঙন বা ফাটল প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হচ্ছে। ভালো মানের টাইলস ব্যবহার এ ছাড়া গ্রাউটের মানও ভালো হওয়া উচিত, যাতে, টাইলসের ফাঁকা স্থানগুলো সঠিকভাবে পূর্ণ এবং মজবুত থাকে।

সঠিক পরিমাণে আঠা ও গ্রাউট ব্যবহার করলে টাইলস মজবুতভাবে বসে এতে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ। করা উচিত সময়মতো টাইলসের ফাঁকা স্থান পরীক্ষা এবং ছোট ফাটল দেখা দিলে মেরামত করা উচিত, তাহলে বড় ফাটল ধরার আগেই সমস্যার সমাধান করা যায়।

টাইলস লাগানো মেঝেতে কোনো ভারী জিনিস নাড়াচাড়া করার ক্ষেত্রে টাইলসের ওপরে কাপড় বা অন্য কোনো সাপোর্ট দিয়ে নিন। এতে নষ্ট হওয়ার ভয় কমে যাবে।

যে ধরনের টাইলস এখন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে?

যে ধরনের টাইলস এখন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে

অন্দরের সৌন্দর্য বাড়াতে মেঝে বড় ভূমিকা পালন করে লাল সিমেন্টের মেঝেতে বড় হওয়া প্রজন্মই এখন বেছে নিচ্ছে নানা নকশার মেঝে। মেঝের নকশা যত সুন্দর আর ছিমছাম, অন্দর সাজাতেও যেন ততটাই সুবিধা। ২০২৪ সালের ধারা অনুযায়ী অন্দরে এখন প্রাধান্য পাচ্ছে একটু চকচকে ঘরানার টাইলস।

তবে যাঁরা চকচকে পছন্দ করেন না, তাঁদের জন্যও আছে নানা ধরনের টাইলস মার্বেলের নকশা, কাঠের নকশা, প্রাকৃতিক ধাঁচের নকশা। জ্যামিতিক নকশার টাইলস এখন জনপ্রিয় সাদা-কালো ও ছাই রং প্রাধান্য পাচ্ছে বেশি, একনজরে জেনে নেওয়া যাক দেশীয় বাজারে টাইলসের দরদাম।

কেনার সময় যা খেয়াল রাখবেন?

ঘর বা আবাসের ধরন বুঝে ফ্লোর টাইলসের ব্যবহার দেখা যায় অফিস কিংবা যেসব স্থানে চলাচল বেশি, সেখানে মার্বেল টাইলস। চিক মোজাইক টাইলস, উডেন ফ্লোর টাইলস, পোরসেলিন টাইলস, জ্যামিতিক নকশার টাইলস ব্যবহৃত হয় বেশি। মেঝেতে অনেকেই প্রাকৃতিক ধরন বোঝাতে উড লুক বা কাঠের মতো দেখা যায়, এমন টাইলস ব্যবহার করেন।

বিভিন্ন কার্পেটের নকশার মতো টাইলসও আছে এ ছাড়া পাথর মোটিফের টাইলসও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। পাশাপাশি অনেক ক্রেতা অমসৃণ টাইলসসহ একরঙা টাইলস বেশি ব্যবহার করছেন। আভিজাত্য আনতে মার্বেল ও গ্রানাইট নকশার টাইলসের কদরও বাড়ছে। পরবর্তী কয়েক বছর এ ধরনের টাইলস বেশি চলবে বলেই মনে করছেন বিক্রেতারা।

টাইলস ফেটে গেলে কী করবেন If Tiles Crack What Should You Do?

টাইলস ফেটে গেলে কী করবেন If Tiles Crack What Should You Do

টাইলস ফেটে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা শুধু আপনার ঘরের সৌন্দর্যই নষ্ট করে না, বরং নিরাপত্তার ঝুঁকিও সৃষ্টি করে। ফাটল ধরা টাইলসের নিচে পানি ঢুকে গেলে বাড়ির মেঝে বা দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়া, ফাটল ধরা টাইলসে হোঁচট খেয়ে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ঝুঁকিও থাকে তাই, টাইলস ফেটে গেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

এই লেখায় আমরা টাইলস ফাটার কারণ, প্রাথমিক পদক্ষেপ, অস্থায়ী ও স্থায়ী সমাধান, কখন প্রফেশনাল হেল্প নিবেন, এবং ভবিষ্যতে টাইলস ফাটা প্রতিরোধের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

টাইলস ফাটার সাধারণ কারণসমূহ?

টাইলস ফাটার অনেক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কিছু কারণ হলো

১ খারাপ ইনস্টলেশন: যদি টাইলস বসানোর সময় সঠিকভাবে আঠা বা গ্রাউট ব্যবহার না করা হয়, তাহলে টাইলস মজবুতভাবে বসে না। ফলে, সামান্য চাপেই ফাটল ধরতে পারে।

২ মেঝের ভিত্তি নড়াচড়া: মেঝের নিচের স্তর যদি স্থিতিশীল না হয়, তাহলে টাইলসের উপর চাপ পড়ে এবং ফাটল সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে, যদি বাড়ির ভিত্তি সময়ের সাথে সাথে বসে যায়, টাইলসেও ফাটল, ধরার সম্ভাবনা থাকে।

৩ ভারি আসবাবপত্র: বড় এবং ভারী আসবাবপত্র বা যন্ত্রপাতি টাইলসের উপর রাখলে টাইলস ফাটতে পারে, বিশেষ করে যদি টাইলসের নিচে সঠিকভাবে সাপোর্ট না থাকে।

৪ তাপমাত্রার পরিবর্তন: তাপমাত্রার ওঠানামার কারণে টাইলস সম্প্রসারিত বা সংকুচিত হয় এই তাপীয় সম্প্রসারণ ও সংকোচন ফাটল সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে কিচেন বা বাথরুমের মতো জায়গায়, যেখানে তাপমাত্রার পরিবর্তন বেশি হয়।

টাইলস ফেটে গেলে প্রাথমিকভাবে কি কি পদক্ষেপ নিবেন ?

প্রথমত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করুন ফাটলটি কত বড়, তা নির্ধারণ করা জরুরি যদি ফাটল ছোট হয়। তাহলে তা সাধারণত সহজেই মেরামত করা যায় কিন্তু বড় ফাটল হলে পুরো ঘরের টাইল প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন হতে পারে।

দ্বিতীয়ত ফাটলের ধরন চিহ্নিত করুন ফাটলটি কি শুধু উপরিভাগে নাকি তা গভীর? যদি ফাটল খুব ক্ষুদ্র হয়। তবে তা সাময়িকভাবে পূরণ করা যেতে পারে কিন্তু যদি ফাটল বড় হয় এবং টাইলসের নিচ পর্যন্ত চলে যায়, তাহলে টাইল প্রতিস্থাপনই একমাত্র সমাধান।

তৃতীয়ত নিরাপত্তা সংক্রান্ত সতর্কতা নিন ফাটল ধরা টাইলস যদি মেঝেতে থাকে, সেখানে হাঁটার সময় সতর্ক থাকুন। ফাটল বড় হলে তা পায়ের নিচে ভেঙে যেতে পারে, যা গুরুতর দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। সাময়িকভাবে সেখানে কোনও প্যাড বা কাপড় অথবা হালকা কোন ফার্নিচার রাখুন, যাতে কেউ হোঁচট খেয়ে পড়ে না যায়।

কিভাবে ফেটে যাওয়া টাইলস মেরামত করবেন?

টাইল ফাটলে স্থায়ী সমাধানের জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে ফাটল যদি বড় হয় এবং টাইলসের পুরো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে একক টাইল প্রতিস্থাপন করাই সবচেয়ে ভালো সমাধান প্রথমে, ফাটল ধরা টাইলসটি সরিয়ে ফেলুন। এর জন্য একটি চিসেল বা ছেনি এবং হাতুড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে সাবধানে টাইলসটি সরিয়ে ফেলুন, যাতে আশেপাশের টাইলস ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

এরপর, নতুন টাইলটি সঠিকভাবে বসানোর জন্য আঠা প্রয়োগ করুন টাইলের নিচে সঠিক পরিমাণে, আঠা প্রয়োগ করলে তা স্থায়ীভাবে বসে থাকবে। নতুন টাইলটি বসানোর পর গ্রাউট দিয়ে ফাঁকা স্থান পূরণ করুন। গ্রাউট টাইলগুলোর মধ্যে ফাঁকা স্থানগুলো পূর্ণ করে এবং সেগুলিকে মজবুতভাবে ধরে রাখে, গ্রাউট শুকিয়ে গেলে টাইলসটি স্থায়ীভাবে বসে যাবে।

ভবিষ্যতে টাইলস ফাটা প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?

প্রথমত উচ্চমানের টাইলস ও গ্রাউট ব্যবহার করুন নিম্নমানের টাইলস দ্রুত ফেটে যেতে পারে, তাই ভালো মানের টাইলস কিনুন। এছাড়া, গ্রাউটের মানও ভালো হওয়া উচিত, যাতে টাইলসের ফাঁকা স্থানগুলো সঠিকভাবে পূর্ণ থাকে এবং মজবুত থাকে।

সঠিক ইনস্টলেশন পদ্ধতি নিশ্চিত করা জরুরি পেশাদার মিস্ত্রি দিয়ে টাইলস বসানো হলে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়। সঠিক পরিমাণে আঠা এবং গ্রাউট ব্যবহার করলে টাইলস মজবুতভাবে বসে থাকবে এবং ফাটার সম্ভাবনা কমে যাবে।

এছাড়া, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত সময়মতো টাইলসের ফাঁকা স্থান পরীক্ষা করা এবং ছোট ফাটল দেখা দিলে, তা মেরামত করা উচিত যাতে বড় ফাটল ধরার আগেই সমস্যার সমাধান করা যায়।

লেখকের মন্তব্য?

লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আর উপকৃত হয়ে থাকলে, অবশ্যই Comments করে জানিয়ে দিবেন।

সবাইকে ধন্যবাদ আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম হাজির হবো আরও নিত্য নতুন টিপস নিয়ে, আমি রবিউল ইসলাম আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রবিউল নেটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url